শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
জিটিবি নিউজ টুয়েন্টিফোর : ‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলের লালচে পিঠে বেড়াতে গিয়ে নাসার রোভার ‘মিস কিউরিওসিটি’র চোখে পড়ল সুবিশাল একটি হ্রদের কঙ্কালসার দেহ! সাড়ে ৩০০ কোটি বছর আগে যা ছিল টলটলে জলে ভরা। চওড়ায় ১০০ মাইল বা ১৫০ কিলোমিটার। রোভারের কৌতূহলী চোখে আরো ধরা পড়ল, সেই শুকিয়ে যাওয়া সুবিশাল হ্রদের খাত থেকে গা বেয়ে দাঁড়িয়ে আছে আলো ঝলসানো লবণের পাহাড়। খাবার লবণ নয়, খনিজ লবণ। উচ্চতায় যা কম করে ৫০০ ফুট। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, সেই লবণের পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে এখনো লুকিয়ে আছে প্রচুর পানি।
নাসার রোভার এমন সব নমুনা খুঁজে পেয়েছে লালগ্রহের ‘গেইল ক্রেটার’ এলাকায়, যা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলে টলটলে পানি ভরা হ্রদটি ছিল অবিকল দক্ষিণ আমেরিকার আল্টিপ্ল্যানোতে লবণাক্ত কুইসকুইরো হ্রদের মতোই! নাসার বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-সাময়িকী ‘নেচার-জিওসায়েন্সে’।
নাসার ‘কিউরিওসিটি মিশন’-এর প্রজেক্ট সায়েন্টিস্ট অশ্বিন ভাসাভাড়া বলেছেন, ‘আমরা প্রমাণ পেয়েছি, মঙ্গলের এই সুপ্রাচীন হ্রদটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বারবার শুকিয়ে গিয়েছে। তারপর আবার সেটি টলটলে পানিতে ভরে উঠেছে। যে গেইল ক্রেটার এলাকায় এই প্রাচীন হ্রদের কঙ্কালসার দেহের হদিস মিলেছে, আমাদের বিশ্বাস, তার আশপাশের এলাকা ছিল অত্যন্ত রুক্ষ। অনেকটা আমাদের সাহারা মরুভূমির মতো। আর এই হ্রদটি ছিল সেই মরুভূমিতে মরূদ্যানের মতো।’
অশ্বিন বলছেন, ‘আমরা এমন প্রমাণও পেয়েছি, হ্রদটির পানি যে শুধুই লবণে ভরা ছিল তা নয়, তাতে তরল পানিও কম ছিল না। হ্রদটির শুকিয়ে যাওয়ার সময়েই তৈরি হয়েছিল সেই লবণের পাহাড়। পাহাড়ি গেইল ক্রেটার এলাকা থেকে নেমে আসার পর মূলত মরুভূমির মতো এলাকাতেই ছিল সেই সুবিশাল হ্রদ। যেন মরূদ্যান। আমাদের মাউন্ট এভারেস্টের মতোই মঙ্গলের গেইল ক্রেটার এলাকায় রয়েছে সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট শার্প।’
বিভিন্ন সময়ে মঙ্গলের বুকে গ্রহাণু, উল্কাপিণ্ড আর ধূমকেতুরা আছড়ে পড়ার ফলেই তৈরি হয়েছিল সেই গেইল ক্রেটার এলাকা, যা মূলত ছিল সুবিশাল গহ্বর। পরে পানির স্রোত এসে ভরিয়ে দেয় গহ্বর। পরে বাতাসের ঠেলায় ওই এলাকায় জন্ম হয় মাউন্ট শার্পের মতো সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গ।
সূত্র : আনন্দবাজার।