বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ অপরাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

হাজীগঞ্জে রাজারগাঁও ইউনিয়নে ভেকু দিয়ে কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ ! বঞ্চিত দরিদ্র শ্রমিকরা !!

মো.মজিবুর রহমান রনি :

হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল যোগদানের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভেকু মেশিনের বিরুদ্ধে অভিযান চললেও রাজারগাঁও ইউনিয়নে ভেকু মেশিন দিয়ে চলছে হতদরিদ্র কর্মসৃজন প্রকল্পের ৩০ দিনের কর্মসূচির কাজ। হতদরিদ্র কর্মসৃজন প্রকল্পের কর্মসূচির কাজ দৈনিক হাজিরা হিসাবে শ্রমিক দ্বারা রাস্তার কাজ কাগজে কলমে থাকলেও তার উল্টোটি দেখা গেলো।

ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুল রহমান এবং প্রকল্প কমিটির ব্যক্তি শ্রমিক দিয়ে রাস্তার কাজ না করিয়ে ভেকু দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। এই প্রকল্পে ৩০ দিন দৈনিক ৩০ জন শ্রমিক ৪০০ টাকা হাজিরা হিসেবে কাজ করবে। কিন্ত রাজারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান ও ইউপি সদস্য জলিল মিয়া ভেকু দিয়ে রাস্তা নির্মান কাজ চলমান রেখেছেন।

পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, কর্মহীন মানুষের জীবন—জীবিকা সচল রাখতে শ্রমিকদের দিয়ে কিছু কাজ করিয়ে পারিশ্রমিক দিলে তারা স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করতো।

ভেকু দিয়ে খনন করার ফলে শ্রমিকেরা যেমন কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি প্রকল্প কাজেও অনিয়ম হচ্ছে।

দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের গৃহীত কর্মসৃজন প্রকল্পে শ্রমিকের অধিকার নিয়ে চলছে অনিয়ম। প্রকল্পে নয়—ছয় ও টাকা লুটপাটের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান ও স্থানীয় মেম্বার জলিল মিয়া ভেকু মেশিন ব্যবহারসহ তাদের অনুসারীদের শ্রমিক বানিয়ে টাকা হাতানোর কৌশল বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের ২০২৩—২৪ অর্থবছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পে মফস্বলের কর্মহীন প্রান্তিক শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার ৩০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প চালু করে।

নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রণালয়/প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় থেকে উপজেলায় বরাদ্দ প্রাপ্তির পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কর্তৃক জনসংখ্যা ও আয়তনের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হয়।

এরপর প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগে ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে শ্রমিকের তালিকা তৈরি করা হয়।

ওই তালিকা যাচাই—বাছাই করে চূড়ান্ত হলে কাজ শুরু করার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নোটিস বোর্ডে প্রকল্পের নামসহ শ্রমিকের তালিকা টানানো হয়। একই সঙ্গে প্রকল্পস্থলে সাইনবোর্ড স্থাপন করে কাজ শুরু করার বিধান রয়েছে।

কিন্ত ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান নিয়ম মানছেন না। চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য জলিল মিয়া রাজারগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব রাজারগাঁও মোল্লা বাড়ির পেছনে নতুন রাস্তার কাজ ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নতুন রাস্তা নির্মান করছেন।

গত ৩ মে শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে রাস্তাটির নির্মান কাজ শুরু হয়। তবে ভেকু দিয়ে মাটি কাটতে গিয়ে ইউপি সদস্য জলিল মিয়া স্থানীয় লোকমান হোসেন মোল্লার জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও ৮নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের টংগিরপাড় গ্রামে এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন সম্পন্ন করেছেন চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর জন্য চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদারকে নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্ত তিনি নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে ভেকু দিয়েই রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেন।

ইউপি সদস্য জলিল মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমি ঢাকা আছি, ঢাকা থেকে এসে আপনার সঙ্গে দেখা করবো।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল মুঠোফোনে বলেন, ভেকু দিয়ে হতদরিদ্র কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ করার কোন সুযোগ নেই। আমি পিআইওকে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলবো

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com