শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৫ অপরাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

সাইমন হোসেনের মৃ/ত্যু/র ঘটনায় দুই জনকে আ/ট/ক করে আদালতে সোর্পদ করেছে পুলিশ।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে টোরাগড় ও মকিমাবাদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত কিশোর মো. সাইমন হোসেনের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় দুই জনকে আটক করে আদালতে সোর্পদ করেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক। এর আগে বুধবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম থেকে ইকবাল সর্দারকে আটক করে র‌্যাব—৭ এবং শাহআলম ভুট্টুকে হাজীগঞ্জ থেকে আটক করে পুলিশ। ইকবাল সর্দার হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৬নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ গ্রামের সর্দার বাড়ি বাসিন্দা ও শাহআলম ভুট্টো ৭নং ওয়ার্ড টোরাগড় গ্রামের মুন্সী বাড়ির বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকালে পুলিশ তাদেরকে মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করলে, বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মো. সাইমন হোসেন। সে ২০ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় হাজীগঞ্জ বাজারে টোরাগড় ও মকিমাবাদ গ্রামের দু—গ্রুফের সংর্ঘষের ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ২২ সেপ্টেম্বর, রোববার নিহত সাইমনের মামা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ৩/৪’শ জনকে আসামি করে একটি মামলা (নং— ১৪) দায়ের করেন।

নিহত সাইমুন হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন তাহফিজুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তার বাবার বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের দিঘদাইর গ্রামে এবং তার সৎ বাবার বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া চরবাকিলা গ্রামে। সে তার মা ও সৎ বাবার সাথে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন খাটরা—বিলওয়াই এলাকায় ভাড়া থাকে।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে র‌্যাব। এক পর্যায়ে র‌্যাব—৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পেরে ঘটনার অন্যতম মূলহোতা পলাতক আসামি মো. ইকবাল হোসেন (৩০) চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেডের সিইপিজেড মোড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

দাঙ্গা—হাঙ্গামাকারীরা বাজারে দোকানপাট ভাংচুর ও মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এবং বিভিন্ন পথচারীদের আক্রমণ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া করতে থাকে। এসময় সাইমন দৌঁড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় ইকবাল হোসেন এবং তার অপরাপর সহযোগীদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র—শস্ত্র দিয়ে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করিলে ভিকটিম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

এসময় সাইমনের আর্তচিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভিকটিমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ভিকটিমের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন।

র‌্যাব এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নিহত ভিকটিম সাইমন (১৫) গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তার বাবা—মায়ের ভাড়া বাসা হতে এশার নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য মসজিদ কমপ্লেক্স সংলগ্ন কুমিল্লা—চাঁদপুর মহাসড়কের রাস্তার উপর পৌঁছালে দেখতে পায় যে, অজ্ঞাতনামা ৩/৪’শ জন ব্যক্তি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা হকিস্টিক, ইট এবং কাঁচের বোতল দিয়ে দুই পক্ষ দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত।

পরবর্তীতে গত ২১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিম সাইমন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব—৭ এর একটি আভিযানিক দল গত ২ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেডের সিইপিজেড মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মো. ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আসামি ইকবাল হোসেন জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এছাড়াও মামলা দায়ের হওয়ার পর হতে আইন—শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল বলে সে জানায়। পরে গ্রেফতারকৃত আসামি ইকবাল হোসেনকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com