বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

তীব্র পানির সংকট; বিপর্যস্ত জনজীবন

 বিশেষ সংবাদদাতা ..

কুষ্টিয়ায় তীব্র পানির সংকট, টিউবওয়েলে উঠছে না পানি বিপর্যস্ত জনজীবন, সেচ প্রকল্পে ও দেখা দিয়েছে পানির সংকট, দিশেহারা কৃষক,কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্হানে পানির স্তর ৩৪ ফুট নিচে নেমে গেছে।

টানা তীব্র তাপপ্রবাহে জেলার ৬ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের টিউবওয়েলে উঠছে না পানি। নদী ও খাল—বিল শুকিয়ে গেছে। ফলে মানুষের মধ্যে তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে পানির সংকটে কষ্ট করেছেন জেলার লাখো মানুষ।

পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।

দীর্ঘ দিন অনাবৃষ্টি, ভূ—গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার, অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলা ও পুকুর, খাল—বিল ভরাটের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে ।

অতি দ্রুত বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, তীব্র তাপপ্রবাহ, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলোও ক্রমেই শূন্য হয়ে পড়ছে। এছাড়াও অপরিকল্পিত গভীর নলকূপ ও অসংখ্য সাবমারসিবল পাম্প স্থাপনে অপব্যবহারের কারণে ভূ—গর্ভস্থ পানির স্তরও ক্রমশ নিচে নেমে যাচ্ছে ।

ফারাক্কা বাঁধের কারণে পদ্মা নদী শুকিয়ে গেছে। যার ফলে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প গঙ্গা—কপোতাক্ষ খালেও পানি নেই। এ ছাড়া গড়াই, কালী নদীসহ অন্যান্য নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। এতে অগভীর টিউবওয়েলে পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

এতে একদিকে পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানির যেমন সংকট দেখা দিয়েছে একই সঙ্গে কৃষি জমিতে সেচ দেওয়ার জন্যও পাওয়া যাচ্ছে না পর্যাপ্ত পানি। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই পানির স্তর নিচে নামতে শুরু করেছে।

বর্তমানে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ৩৪ ফুট নিচে নেমে গেছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির পাশাপাশি কৃষি জমিতে সেচের পানির সংকট দেখা দিয়েছে বেশ।

বিশেষ করে ভেড়ামারা,কুষ্টিয়া শহর ও তার আশেপাশে,কুমারখালি, দৌলতপুরের একটি অঞ্চল আল্লারদর্গা বা বাজারের আশেপাশের এলাকায় খাবারের পানি বা মাঠের সেচে পানি উঠছে না।

ফলে বড়ো ধরনের বিপাকে পড়েছে বিপাকে পড়েছে সর্বস্তরের জনজীবন, ধানের জমিতে সেচ দিতে পারছে না কৃষকরা।

কুষ্টিয়া সদর এলাকার মারুফ হোসেন বলেন, আমাদের এলাকার ৯০ ভাগ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। পানি না উঠায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই ।

বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য এক পাড়া থেকে আরেক পাড়ায় যেতে হচ্ছে, নিয়মিত গোসলও দিতে পারছি না । আশেপাশের এলাকার অবস্থাও একই।

পানির অভাবে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গত কয়েকদিন যাবত টিউবওয়েলে পানি উঠে না। বর্তমানে তীব্র পানি সংকটে দিশাহারা অবস্থা।

কুমারখালীর বাধবাজার এলাকার আসিফ ইকবাল বলেন, কয়েকদিন ধরে অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। খালবিল ও নদী শুকিয়ে গেছে। পানির অভাবে আমরা খুব কষ্টে আছি।

খাবার পানি, গৃহস্থালির কাজ ও কৃষি জমিতে সেচ দিতে ভোগান্তি হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

খোকসা, কুমারখালী, ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, গত কয়েকদিন ধরে তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না।

মাঠের সেচ পাম্পে পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। বোরো ধানসহ বিভিন্ন চাষাবাদ নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত। পানির অভাবে ফসলের ফলন কমে যাবে এবং খরচ বেড়ে যাবে। দিনদিন পানির সংকট বেড়েই চলেছে।

তবে দৌলতপুর উপজেলার আল্লার দর্গা এলাকা ব্যতীত এখন পর্যন্ত তেমন পানির সংকটে পড়েনি দৌলতপুরবাসী, রামকৃষ্ণপুর,চিলমারী ইউনিয়নের চরণচলের কৃষক রাও এখন পর্যন্ত রয়েছে স্বস্তিতে, তবে নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়াই আগামীতেও পানির সংকটে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে দৌলতপুরবাসী।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী ইব্রাহীম মো. তৈমুর এর কাছে উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুষ্টিয়ায় ভূ—গর্ভস্থ পানির স্তর ৩৪ ফুট নিচে নেমে গেছে।

তীব্র তাপপ্রবাহ, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়া, নদী খালবিল শুকিয়ে যাওয়া, অপরিকল্পিত গভীর নলকূপ ও অসংখ্য সাবমারসিবল পাম্প স্থাপনের কারণে ভূ—গর্ভস্থ পানির স্তরও নিচে নেমে গেছে।

ব্যক্তিগতভাবে বসানো বেশিরভাগ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। পানির স্তর ২০ থেকে ২৫ ফুট নিচে নামলেই সাধারণ নলকূপ ও টিউবওয়েলে পানি উঠতে সমস্যা দেখা দেয়, পানি সংকট সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com