শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ পূর্বাহ্ন
জিটিবি নিউজঃ রাত পোহালেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আজ সোমবার তাই বাইরে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ সব প্রার্থীর জন্য। কিন্তু তাই বলে বসে নেই প্রার্থীরা। শেষ সময়ে নির্বাচনে জিততে করণীয় নির্ধারণ করছেন তাঁরা। ভোটের দিন নিজের ও দলের নেতা–কর্মীদের ভূমিকা কী হবে, কে কোথায় থাকবেন— সেই ছক কষছেন ও কৌশল নির্ধারণ করছেন তাঁরা। অন্তত আজ প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকারের বাসায় গিয়ে এমনটাই দেখা গেল।
সকাল থেকে বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার টঙ্গীতে তাঁর নিজ বাসভবনে দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনার নানা বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। এজেন্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন। কে কোন কেন্দ্র থাকবেন, সেটিও নির্ধারণ করেছেন। তাঁর বাড়িতে সকাল থেকে নেতা–কর্মীদের ভিড় ছিল।
হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘ন্যূনতম সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি জয়লাভ করব। মানুষ আমার অতীত কর্মকাণ্ডের ওপর আস্থা রেখে আমাকেই ভোট দেবেন। অনেক এলাকায় আমার এজেন্টদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তাই তাঁদের সাহস জোগাচ্ছি। সবার সঙ্গে কথা বলছি। কাজ ভাগ করে দিচ্ছি।’
এরপর প্রথম আলোর কাছে তিনি অভিযোগ করেন, গাজীপুরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ধীরাশ্রম থেকে গতকাল রাতে ডিবি পুলিশ বিএনপির ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছেন। তাঁরা হলেন কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মজিবর রহমান, কেন্দ্র পরিচালনা সদস্যসচিব কবীর হোসেন, ধীরাশ্রম পূর্বের প্রধান এজেন্ট আনোয়ার, বিএনপির কর্মী মোশারফ হেসেন বাদশা, হেলেন বাদশা, আলমগীর। এ ছাড়া ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বাঙাল গাছ এলাকায় বিএনপির নির্বাচনী অফিসের কেয়ারটেকার শামীমকে বেধড়ক পিটিয়েছে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে পুলিশ। বাসন ইউনিটের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব, বিএনপির সদর থানার সাংগঠনিক সম্পাদক বশির আহমেদ বাচ্চুর বাড়িতে ঢুকে গভীর রাতে পুলিশ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে এবং এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়েছে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের হক মার্কেটের কেন্দ্র কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইমামুদ্দিনের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে।
যদিও হাসান সরকারের এ অভিযোগকে বিভ্রান্তিমূলক বলছে গাজীপুর পুলিশ। জেলার গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। গতকাল রোববার রাত থেকে ডিবি-পুলিশ কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি। তাদের কোনো দলও বের হয়নি।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বাসার সামনে গিয়ে দেখা গেল একই চিত্র। তবে তাঁর বাড়ির সামনে নেতা–কর্মীদের ভিড় কিছুটা বেশি। কেউ জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে দেখা করে ফিরে যাচ্ছেন, আবার কেউ বা সেখানে আসছেন। জাহাঙ্গীরও নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। কোন কেন্দ্রে কীভাবে তাঁর লোক থাকবেন, সে বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন।
জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের মতো আমি জনবিচ্ছিন্ন নই। আমি আগে থেকেই ঠিক করেছি জনপ্রতিনিধি হব। তাই ২০০৫ সাল থেকেই কাজ করছি। সরকারি দল করি বলে প্রশাসন বা পুলিশের সঙ্গে আমার ওঠা-বসা নেই। আমি তরুণদের সঙ্গে যেমন মিশি, তেমনি প্রবীণদের সঙ্গেও আমার ভালো সম্পর্ক। নারী ভোটারদের সঙ্গেও আমি যোগাযোগ রেখে চলি। ভিন্ন ধর্মের মানুষদের গুরুত্বও আমার কাছে সমান। আমি প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। তাই জয়ের বিষয়েও একটু বেশিই আশাবাদী। মানুষকে নিয়েই আমার কাজ। আশা করি, মানুষ আমাকে নিরাশ করবে না। ৪২৫টি কেন্দ্রের প্রতিটি কেন্দ্রেই আমার আলাদা কমিটি আছে। শেষ সময়ে তাদের সঙ্গে কাজের সমন্বয় করছি।