শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

সোয়া লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ২% সুদে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছোট ব্যবসায়ীদের ২ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘মানুষের কাজ নেই। বিশেষ করে একেবারে নিম্ন আয়ের লোক, এমনকি ছোটখাটো কাজ করে যারা খায় তাদের কষ্ট আমরা জানি। ছোটখাটো ব্যবসা যারা করে, কৃষিকাজ যারা করে তাদের কথা চিন্তাভাবনা করে প্রণোদনা দিয়েছি। সেখান থেকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। মাত্র ২ শতাংশ ইন্টারেস্টে আমরা এই টাকাটা দিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর যারা ঋণ নিয়ে করোনাভাইরাসের কারণে দিতে পারেননি তাঁদের এখনই সুদ পরিশোধ করতে হবে না। এ নিয়ে তিনি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বসবেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় কাজ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা এবং মানুষের জীবন ও জীবিকার পথ উন্মুক্ত রাখা। এ জন্য আস্তে আস্তে লকডাউন শিথিল করে দিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সব কিছু যাতে স্বাভাবিক হয়ে যায় সেদিকে নজর দিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন। সকাল ১০টায় এই ভিডিও কনফারেন্স শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী এবং সিরাজগঞ্জ জেলার সঙ্গে যুক্ত ছিল এটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সব জেলার জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), সিভিল সার্জন, নার্স, সেনা সদস্য, মসজিদের ইমাম, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও ত্রাণ বিতরণ নিয়ে মতবিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় আড়াই ঘণ্টার এই ভিডিও কনফারেন্সে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন। সর্বশেষ ২০ এপ্রিল ঢাকা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের আটটি জেলার জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা ভিডিও কনফারেন্স করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে প্রয়োজনে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, ‘স্কুলসহ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটাও খুলবে না। প্রয়োজনে অন্তত আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ সব কিছু বন্ধ থাকবে। দেখা যাক করোনাভাইরাস কী হয়। যখন এটা (করোনাভাইরাস) থামবে তখন আমরা খুলব।’

কৃষিই মানুষকে বাঁচাতে পারে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান মহামারির পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁর আশঙ্কা গোটা বিশ্ব দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে। এ পরিস্থিতির মোকাবেলায় করণীয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাসের পর যে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে তা থেকে একমাত্র কৃষিই মানুষকে বাঁচাতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের খাদ্যের যেন সমস্যা না হয়, তাই ধান ওঠার পরপরই যেন ফসল আমরা ফলাতে পারি, কেউ যেন এক টুকরো জমিও ফেলে না রাখে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। তরিতরকারি, ফলমূল যে যা পারেন উৎপাদন করবেন।’ যাদের পোল্ট্রি ও ডেইরি ফার্ম আছে তাদের মুরগি, ডিম-দুধ অল্প দামে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

আট হাজার চিকিৎসক-নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে : করোনাভাইরাস চিকিৎসায় নতুন করে দুই হাজার চিকিৎসক ও ছয় হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের চিকিৎসা করার জন্য বিশেষভাবে নতুন দুই হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেব। যারা ইতিমধ্যে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে রয়ে গেছে, তাঁদের আমরা নিচ্ছি। আর ছয় হাজার নার্সও আমরা নিয়োগ দেব। এটার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আমি নিজে মিটিং করে সব ঠিকঠাক করে দিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক জেলায় একটি হাসপাতালে আইসিইউর (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) ব্যবস্থা করব।’

ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিনের প্রশংসা : করোনাভাইরাস দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য ভিক্ষা করে জমানো ১০ হাজার টাকা দান করা শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নাজিম উদ্দিনের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘শেষ সম্বলটুকু দান করে তিনি (নাজিম উদ্দিন) বিশ্বে একটি মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এখনো এই মানবতাবোধটা আছে। কিন্তু সেটা আমরা পাই যারা নিঃস্ব তাদের কাছে। অনেক সময় দেখি বিত্তশালীরা হা-হুতাশ করেই বেড়ায়।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ মুহূর্তে তার ভিক্ষা পাওয়া মুশকিল। তার পরও সে চিন্তা করেনি। শেষ সম্বলটুকু সে দান করে গেছে। এই টাকা দিয়ে জামা কিনতে পারত, ঘরের খাবার কিনতে পারত। তার জন্য সে অনেক কিছু করার চিন্তা করতে পারত। কিন্তু সে তা করেনি।’

রূপপুর প্রজেক্টের কেউ এলে কোয়ারেন্টিন : পাবনার সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপপুর প্রজেক্টে কর্মরতরা চলে গিয়ে আবার এসেছেন। তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। রাশিয়ায় আবার নতুন করে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ জন্য রূপপুর প্রজেক্টে যাঁরা আসবেন তাঁদের আগে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করতে হবে। কোয়ারেন্টিন শেষ হলে তাঁদের কাজে লাগাতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com