শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

করোনার প্রভাবে এডিপির আকার ২,০৫,১৪৫ কোটি টাকা

প্রাণঘাতী করোনার প্রভাবে কার্যত অচল দেশের অর্থনীতি। কারখানার চাকা ঘুরছে না। বন্দর, দোকানপাট, শপিং মল, বিপণিবিতান বন্ধ। ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী চলছে টানা সাধারণ ছুটি। ফলে সরকারের ভ্যাট, আয়কর ও শুল্ক আদায়ও স্থবির। কভিড-১৯-এর সংক্রমণে যে হারে দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বাড়ছে, তাতে কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তা বলা অনিশ্চিত।

এমন বাস্তবতায় আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী অর্থবছরের জন্য এডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির চেয়ে মাত্র ১.১৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জোগান দেওয়া হবে এক লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। বাকি ৭০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়ার আশা করছে সরকার। পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী অর্থবছরে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে বরাদ্দও দেওয়া হবে কম। যেসব প্রকল্প অগ্রাধিকার সেসব প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।

অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক দশক ধরে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে প্রতিবছর এডিপির আকার বাড়ানো হয়েছে গড়ে ১৫ শতাংশ হারে। কিন্তু আগামী অর্থবছরের এডিপি বাড়ছে বর্তমান অর্থবছরের চেয়ে মাত্র সোয়া শতাংশ। অবশ্য এ জন্য রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কমে যাওয়াকে প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায় উঠে এসেছে, চলতি অর্থবছর শেষে এক লাখ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি থাকবে। করোনার প্রভাব মোকাবেলার জন্য আগামী অর্থবছরে নানা ধরনের ছাড় দিতে হতে পারে সরকারকে। সে কারণে আগামী অর্থবছর কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় না-ও হতে পারে। সে বিষয়টি মাথায় রেখে এডিপির আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব নূরুল আমিন কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রতিবছর যে হারে এডিপির আকার বাড়ে, আগামী অর্থবছর সেই হারে বাড়ছে না। কারণ করোনা-পরবর্তী সময়ে রাজস্ব আদায় কম হবে। সাধারণত রাজস্ব আদায়ের টাকা দিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন হয়। সে কারণে এডিপির আকার তেমন বাড়েনি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা এডিপির আকার এরই মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়ে বলা হয়েছে এই টাকা ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে বিতরণ করতে। তবে টাকা বিতরণের সময় অবশ্যই কৃষি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। গত ২২ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক পরিপত্রে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মহমারি করোনা মোকাবেলায় অগ্রাধিকার খাতগুলোতে সরকারের অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দিতে হচ্ছে। সে কারণে এডিপিতে যে এক হাজার ৭০০টি প্রকল্প আছে, সেখান থেকে ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ ও ‘মধ্যম অগ্রাধিকার’ প্রকল্প চিহ্নিত করে সেগুলো বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে হবে। তবে যেগুলো নিম্ন অগ্রাধিকার বা কম গুরুত্বপূর্ণ সেসব প্রকল্পের অর্থ ছাড় বা ব্যয়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিতে হবে।

এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর এরই মধ্যে ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে এডিপির টাকা বিতরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশন। কোন মন্ত্রণালয়ের কত টাকা প্রয়োজন তা পাঠাতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। চিঠি পাওয়ার পর মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো তাদের চাহিদা পাঠাতে শুরু করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com