শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৯ অপরাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

ছাত্র সমন্বয়কের দায়ের করা মামলার আসামি মৃত ২ আওয়ামী লীগ নেতা

গত ৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় মামলা দায়ের করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মো. এমরান। ওই মামলায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা সবাই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।

মৃত আসামিদের মধ্যে একজন মো. মমিন। তিনি গত ২৪ জুন ভোরে হাঁটতে বেরিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। দায়ের করা মামলায় তাকে ৩৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

তবে নাম উল্লেখ করা ৯৬ জনের মধ্যে ২ আওয়ামী লীগ নেতা মারা গেছেন আগেই। তাদেরও আসামি করা হয়েছে। মামলার নথিপত্র ঘেঁটে এবং স্বজনদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এ বিষয়ে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মমিনের ছেলে মো. সাঈফ বলেন, আমার বাবা চলতি বছরের জুনের ৪ তারিখ ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মামলার বিষয়টি এখনই জানলাম। আমার বাবা তো জুনেই মারা গেছেন। তিনি কী করে ৪ আগস্টের হামলার ঘটনায় মামলার আসামি হন, সেটা তো ধারণার বাইরে।

 বিষয়ে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াহিদুর রহমান ফরিদের বড় ছেলে মো. ফরহাদ বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। তিনি কিডনিজনিত সমস্যার কারণে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর এক বছর পরের ঘটনার মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। এটা কেমন অবিচার? একজন মৃত মানুষ কী করে আসামি হতে পারেন?

মামলায় আসামি করা আরেকজন ওয়াহিদুর রহমান ফরিদ। তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ—সভাপতি ছিলেন। তিনি গত বছরের সেপ্টেম্বরে কিডনিজনিত সমস্যার কারণে মৃত্যুবরণ করেন। দায়ের করা মামলায় তাকে ৫৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুবির সমন্বয়ক মো. এমরান বলেন, মামলার অভিযোগ এবং অভিযুক্তদের নাম ঠিক আছে। আসামিদের নাম শনাক্তে কোনো ভুল আছে কি না আমরা খতিয়ে দেখছি।

সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, মামলার বাদী অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। পুলিশ সেটার তদন্ত করবে। মৃত কারও নাম পাওয়া যায় তবে তদন্তে তার নাম বাদ পড়বে। একটি ঘটনার বিষয়ে মামলা হলে সেই ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসে পুলিশের তদন্তে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু, নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ, সদর দক্ষিণ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন অপু, সাধারণ সম্পাদক তুহিনসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২ অক্টোবর) রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মোবাইল তল্লাশি, হামলা, মারধর, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুবির সমন্বয়ক মো. এমরান। মামলায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০—২০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয় সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোটভাই, সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ারকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com